চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনায় বোঝা গেছে, পূর্বে গোপনে দাফিত চারজনের মরদেহ now উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে সাড়ে আটটা থেকে দুপুরের সাড়ে বারোটা পর্যন্ত এই কাজটি সম্পন্ন করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (নির্ণয়প্রাপ্ত) নূরুল হুদা মনিন।
প্রয়াতদের মধ্যে যারা মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে, তারা হলো—চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পিরোজখালী গ্রামের লাল্টু হোসেন, খেজুরা গ্রামের সেলিম (৪৫), নফরকান্দি গ্রামের খেদের আলী (৫০), এবং শংকরচন্দ্র গ্রামের শহিদুল মোল্লা।
উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে ডিঙ্গেদহ বাজারে কয়েকজন একসঙ্গে বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করেন। এর পরদিন তারা অস্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে ছয়জনের মৃত্যু হয়। রোববার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যুতে এই ঘটনার সত্যতা উঠে আসে। গ্রেফতার এড়ানোর জন্য পরিবারের সদস্যরা প্রথমে চারজনের মরদেহ গোপন করে দাফন করেন।
এ বিষয়ে সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হোসেন আলী বলেন, নিহত লাল্টুর ভাই রাকিব ১৩ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় যে, নিহত চারজনের মরদেহ গোপনে দাফন করা হয়েছিল। এরপর ১৫ অক্টোবর আমরা মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করলে, ১৬ অক্টোবর আদালত এই নির্দেশ দেন এবং জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ দেন।
আদালতের নির্দেশনায় চারজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। আইনগত ব্যবস্থাপনার জন্য ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিষাক্ত স্পিরিটের শিরোনামে মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যালকোহল বিক্রির সঙ্গে স্থানীয় একটি চক্র জড়িত। মামলার পর চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ ঝিনাইদহ থেকে মূল আসামি ফারুক আহমেদ ওরফে ‘অ্যালকো ফারুক’ (৪০) এবং তার সহযোগী জুমাত আলীকে (৪৬) গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ১১৭ বোতল মেয়াদোত্তীর্ণ স্পিরিট উদ্ধার করা হয়।
ফারুক স্বীকার করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি হোমিও চিকিৎসার আড়ালে বিষাক্ত ও মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যালকোহল বিক্রি করে আসছিলেন এবং চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন।
সহকারী কমিশনার নূরুল হুদা মনিন বলেন, আমি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছি এবং আমার উপস্থিতিতে চারজনের মরদেহ উত্তোলন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply